মাথা হ্যাং করা কোরিয়ান মাস্টারপিস থ্রিলার সিনেমা পর্ব - ২। থ্রিলার সিনেমার বাপ্ aamirsvlog

 যারা কোরিয়ান মাস্টারপিস সিনেমা খুঁজছেন এই পোস্টটি তাদের জন্য। এই পোস্ট এ আজ পাবেন কোরিয়ান থ্রিলার মাস্টারপিস  সিনেমার দ্বিতীয় পর্ব।  সেরা পাঁচটি সিনেমা থাকছে এই পোস্টে।  তাহলে শুরু করা যাক ...

 1. I Saw the Devil (Kim Jee-woon, 2010)

Genre: Thriller/Crime.

Running Time:2h 23m

Director: Kim Jee-woon

Box office: US$12.8 million

Budget: US$6 million

Rotten Tomatoes:81%

IMDb:7.8

আমি নিজেই তো 18+ না।

I saw the devil একটা ভয়ের নাম। মুভির নামই অনেক কিছু বলে দেয়। এটা একটা ভয়ানক, বীভৎস, নৃশংস প্রতিশোধের গল্প। মুভির কিছু কিছু সিন এতই বীভৎস যে আমি স্কিপ করে দেখছি। মুভি দেখার সময় পুরো টাইম আপনি মানসিক চাপের মধ্যে থাকবেন। ভিলেনটি আপনার রক্তে হিম ধরিয়ে দিবে। এই মুভিতে এতই ভায়োলেন্স ছিলো যে রিলেজের আগে কোরিয়ান মিডিয়া রেটিং বোর্ড মুভির পরিচালক Jee woon kim কে মুভির কিছু সিন কেটে দিতে বাধ্য করা হয়েছে। তা না হলে তারা মুভিটিকে রেস্ট্রিক্টেড রেট দিত। যার কারণে হয়ত মুভি রিলিজ পাওয়ার সুযোগই পেত না। মানে মানুষ তো দেখছে 122 মিনিটের মুভি। আর এতেই যা তাতেই অবস্থা টাইট। পরিচালক এর থেকেও ভয়ানক কিছু সিন রেখেছিল যা তাকে কাট করতে বাধ্য করা হয়েছে। যা মানুষ কোনোদিন দেখতেও পারবে না। 

সবাই জানে বলিউডে এর রিমেক না ইন্সপার্য়াড বলা যায় করা হয়েছে Ek villain নামে। বেসিক স্টোরী একই কিন্তু ওটা বলিউড স্টাইলে করা হয়েছে। কোরিয়াতেই ঐ মুভি কাট করে রিলিজ দেওয়া হয়েছে আর এটা তো বলিউড। 

মুভির স্টোরি ছোট্ট করে ধরিয়ে দিতে চাই।এতে কোনো ক্ষতি হবে না। মুভির নায়ক সিক্রেট এজেন্ট Soo kyun এর হবু ওয়াইফ কোনো এক জায়গায় বেড়াতে গিয়ে নৃশংস ভাবে খুন হয়। এখন সে কেন খুন হয়? কে করে? কিসের জন‍্য করে? জানতে চান তো এই অসাধারণ ভয়ানক মুভি দেখতে পারেন।

এখন যদি আপনার এরকম ভয়ানক মুভি দেখার পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকে বা মাত্রাতিরিক্ত ভায়োলেন্স সহ‍্য করতে না পারেন তাহলে এটা আপনার ব‍্যাপার। তবে মুভির গা শিহরনি রিভেঞ্জ,গা গুলিয়ে দেওয়া ভায়োলেন্স আপনাকে শান্তিতে মুভি দেখতে দেবে না। এটা অন‍্যতম ভয়ানক রিভেঞ্জ মুভি। অন্তত আমার এটা দ্বিতীয়বার দেখার ইচ্ছা নাই। কি রিভেঞ্জ রে ভাই ধরে, মারে, ধরে, ছাড়ে আবার ধরে। জানি মুভিটি প্রায় সবাই দেখেছে আমিই দেরি করে দেখছি। তারপরও এখনো যারা বাদ আছেন এই ভয়ানক মুভির তিতা স্বাদ নিতে তার স্ব ইচ্ছাই দেখতে পারেন যদি আপনি শয়তান দেখতে চান তো 

মুভিটি ১৯ টি নমিনেশনের মধ‍্যে ১৬ টি এওয়ার্ড জিতেছিল। মুভির ভয়ানক সাইকো কিলার choi min sik যে Old boy মুভিতেও এরকম ভয়ানক পারফরম্যান্স দিছে। সবমিলিয়ে ইহা একটি অসাধারণ ভয়ানক মুভি।

2. Mother (Bong Joon-ho, 2009)

রানিং টাইমঃ ১২৯ মিনিট

ভাষাঃ সাউথ কোরিয়া

জনরাঃ Drama, Psychological Thriller, Crime   

পরিচালকঃঃ Bong joon-ho

IMDb: 7.8/10

যারা থ্রিলার মুভি ভালোবাসেন তারা হয়তো এই মুভিটি দেখে থাকবেন।

ছবিটির নাম Mother (Madeo)।মুক্তি পায় 2009 সালে । Cannes Film Festival এ Un Certain Regard এ প্রতিযোগিতা করে।ছবিটি কান্স এ মুক্তি পায় 16 May,2009 এ আর দক্ষিন কোরিয়ায় মুক্তি পায় 28 May,2009 এবং দেশি,বিদেশি অনেক পুরস্কারে বিভিন্ন বিভাগে মনোনীত ও জয়ী হয়। 5 মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বানানো এই ছবিটি বক্স অফিসে 17 মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। 2010 সালে বিভিন্ন পত্রিকার সেরা দশটি ছবির তালিকায় এটির নাম ছিল। 

ছবিটি পরিচালনা করেন Bong-Joon-Ho যিনি এই ছবির আগে Memories of murder এর মতো মাস্টারপিস পরিচালনা করেছিলেন এই Mother ছবিটিতেও তিনি তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তাছাড়াও Hong Kyung-pyo এর সিনেমাটোগ্রাফি আর Lee Byung-woo এর মিউজিক ও এক কথায় অনবদ্য। বেশ কতগুলি সিনে মিউজিক আর ক্যামেরার অসাধারন মেলবন্ধন টানটান উত্তেজনা তৈরী করেছে। তবে ছবিটি 18+ দের জন্য কারন একটি দৃশ্যে ন্যুডিটি এবং বেশ কয়েকবার  Violence দেখানো হয়েছে। 

#SPOILER___ALART___

এবার আসা যাক গল্পে-একজন বিধবা মা এবং তার মানসিক ভাবে অসমর্থ ছেলের গল্প হলো  Mother।একটি মেয়েকে খুন করা হয় এবং সেই খুনের আসামী হিসাবে Mother এর ছেলের জেল হয়। এইবার সেই মা কিভাবে ছেলেকে বাচাবেন এবং তিনি তাকে বাচানোর জন্য কতদূর পর্যন্ত যেতে পারেন সেটাই দেখানো হয়েছে এই ছবিতে। গল্প অনেকগুলি চমকে ভরপুর যেটি পরিচালক Bong এবং Park Eun-kyo রচনা করেছেন। যেটি শুধু থ্রিলার প্রেমীরাই না যেকোনো সিনেমা প্রেমিই ভীষনভাবে উপভোগ করবেন।

ছবিতে সকলেই ভালো অভিনয় করেছেন তবে মুখ্য ভূমিকায় মানে মা এর চরিত্রে অভিনয় কারী Kim Hye-ja ছবিটিকে আলাদা মাত্রায় নিয়ে গেছেন আর ছেলের চরিত্রে Won Bin ও তার অসাধারণ অভিনয় দিয়ে তার চরিত্রের সাথে ন্যায় করেছেন। Moon Sae-kyung এর Edit করা 128 মিনিটের এই ছবিটি একবারও আপনাকে বোর করবে না এবং নিষ্পলক ভাবে সম্পূর্ন ছবিটিকে উপভোগ করবেন।একটি সিন এর পরের সিন কী হবে সেটা আপনি ভাবতেও পারবেন না আর সিনেমার শেষে আছে এক অভাবনীয় চমক। 

3. Sympathy for Mr. Vengeance (Park Chan Wook, 2002)

Genre:Thriller

Country :Korea

Director:Park Chan-wook

Starring:Shin Ha-kyun,

Song Kang-ho

RT:53

Imdb:7.6

Park Chan-wook কে কোন মুভি দিয়ে চিনেছেন জিজ্ঞাসা করলে সবাই হয় Oldboy অথবা Thirst এর কথা বলবে।এর আড়ালে চাপা পড়ে যায় তার প্রথম ক্লাসিক মুভিটা যেটা দিয়ে বিখ্যাত Vengeance Trilogy শুরু হয়েছিল।আর এখানেই আমরা দেখতে পাই একজন সাধারণ মানুষ দেয়ালে পিঠ থেকে গেলে কতটা ভয়ানক ভাবে পাল্টে যেতে পারে।

#Mild_Spoiler

কাহিনি: Ryu একই সাথে বোবা এবং বধির। ঘরের অসুস্থ বোন ছাড়া তার আর কেউ নেই।বোনের আবার শীঘ্রই কিডনী ট্রান্সপ্লান্ট করাতে হবে।কিন্ত তার না আছে টাকা, না আছে উপযুক্ত ডোনার।বাধ্য হয়ে সে এক মানব অংগ পাচারচক্রের কাছে যায়। শর্ত? :নিজের কিডনীর বিনিময়ে তাকে তার বোনের উপযুক্ত কিডনী দেওয়া হবে।

ফলাফল : তার কিডনী আর সঞ্চিত সব টাকা নিয়ে পাচার গ্রুপ লাপাত্তা। Ryu র কাছে তখন একটাই উপায়, নিজের বসের মেয়েকে কিডন্যাপ করে মুক্তিপণ আদায় করা।টাকা টা হাতে পেলে যদি নিজের একমাত্র বোন টিকে ফিরে পাওয়া যায়।হোক না তার পাপ।সে তো কারোর ক্ষতি করছে না। সেই মোতাবেক কাজেও নেমে পড়ে সে। এখান থেকে যা যা ঘটা শুরু হয় তার সারমর্ম একটাই "A series of Unfortunate Events".

.কিন্ত Ryu র এত আগপাছ ভাবার সময় নেই,ভাবলে তো তার বোন বাচবে না। বাকিটা শুধু Roller Coaster Ride ..যেখানে আপনি একদম শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত কি হবে সেটা আন্দাজের "আ" ও করতে পারবেন না ।

রিভিউ: রিলিজের সময় বক্স অফিস বা সমালোচক কোন সাইডেই সুবিধা করতে পারেনি  মুভিটা।কারণ মুভির Raw B টাইপ ফিলিং টা অনেকেই হজম করতে পারেন নি।এইজন্য এখনো কোরিয়ান লাভার দের কাছে ও ভীষণ ব্রাত্য মুভিটা। একটা শব্দ ও উচ্চারণ না করেও টপ ক্লাস অভিনয় দিয়েছেন Shin Kyun...আর বস চরিত্রে Song  kang hoo কে তো আশা করি সবাই ।স্নেহশীল পিতা কিংবা নির্দয় বসের চরিত্রে স্বল্প সময়ে সব আকর্ষণ টেনে নিয়েছেন তিনি।সবচে আলাদা লেগেছে BGM র নামেমাত্র ব্যবহার, স্পেশালি ভায়োলেন্স সীন গুলোতে ।বন্ধ হল রুমে কারোর খুলি ফাটানো হচ্ছে/কাউকে নদীতে ডুবিয়ে মারা হচ্ছে, একদম সেই ন্যাচারাল শব্দ টা পাবেন আপনি।কোন  কৃত্রিমতা নেই। যদি Park chan wook এর মুভি না দেখে থাকেন আগে,তাহলে এটাই হতে পারে আপনার Starter Item...মোটেও হতাশ হবেন না।

4. Sympathy for Lady Vengeance (Park Chan-wook, 2005)

প্রতিশোধ শব্দটা বেশ নাটুকে। রক্তে কেমন দোলা দিয়ে যায়। ছেলেবেলায় প্রতিশোধ নেবার ব্যপারটা এলেই বেশ চনমনে লাগতো। স্কুলের ক্যাপ্টেন নাম লিখে জমা দিয়েছে ক্লাস টিচারের কাছে। নতুন কলম কেমন লিখে সেটা প্রাকটিস করা হত ক্যাপ্টেনের সাদা শার্টে। 

কোরিয়ান ড্রামার রিভেঞ্জ অন্য ধাচের। কোরিয়ানরা একরকম প্রতিষ্ঠিত করেই ফেলেছে, মানুষ মাত্রই ঠাণ্ডা মাথার মহা শয়তান। সাফল্যের সাথে একটা কোরিয়ান রিভেঞ্জ ড্রামা দেখার পর হৃষ্টমনে চায়ের দোকানে বসবেন। ধূমায়িত কাপে চুমুক দিতে দিতে ভাববেন পাশের লোকটার মনে কী চক্রান্ত চলছে। 

তরুণীর বয়স হবে উনিশ, বালিশ চাপা দিয়ে ৫ বছরের ছোট্ট এক ছেলেকে মেরে ফেলেছে। অপরাধ – ছেলেটা কাঁদছিল খুব। ক্যামেরার সামনে অপরাধ স্বীকার করার পর লাস্যময়ী নিরীহদর্শন তরুণীর এহেন কর্মকান্ডে সারা জাতি মর্মাহত। তরুণীর কারাদণ্ড হলো। জাগতিক নিয়মানুসারে মানুষের ভুলে যেতেও সময় লাগলো না। কিন্তু কারাবাসে তরুণী প্রতিশোধের পরিকল্পনা আটে। দীর্ঘ সময় ধরে পারিপার্শ্বিক সহায়তা নিয়ে প্রস্তুত হতে থাকে খুনের। কেন, কার প্রতি এ প্রতিশোধ জানতে হলে সিনেমা দেখতে হবে। 

পার্ক চ্যান-উকের The Vengeance Trilogy’র শেষাংশ Sympathy for Lady Vengeance. সত্যি বলতে ট্রিলজির প্রথম দুই মুভির মতো এটাতে প্রতিশোধের মাত্রা ততটা আশ্চর্যজনক মনে হয়নি। এর কারণ হলো রিভেঞ্জের সাথে অনেকটা জাস্টিসের গন্ধ মিশে ছিলো। আমাদের সবার আল্টিমেট চাওয়া। 

মানুষ হিসেবে আমরা যা চাওয়া উচিৎ বলে মনে করি, আর আদতেই যা চাই, এ’দুয়ের মাঝে বেশ কদাকার একটা দাগ আছে। চ্যান-উক এটা নতুন করে উপলব্ধি করেয়েছে আমাকে। 

5. New World (Park Hoon Jung, 2013)

Directed by: park Hoon Jung

Starring: Lee jung jae,Chol min-sik

County: South Korea

Budget: 7.3 million

Box Office: 31.7 million(according to Wikipedia)

কোরিয়ান মুভি প্রেমিদের নতুন করে এ মুভির কথা না বললেও চলবে।।

এটা একটা ক্রাইম ড্রামা মুভি।যারা গ্যাংস্টার টাইপের মুভি দেখেন তাদের জন্য নিখাত রসগোল্লার ডিব্বা।কাহিনী শুরু হয় গোল্ডম্যান ইন্টারন্যাশনাল কম্পানির চ্যায়ারম্যানের সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুুর পর।গোল্ডম্যান ইন্টারন্যাশনাল কম্পানিটা সাউথ কোরিয়ার করপোরেট ক্রাইম সিন্ডাকেট।মূূলত এরপর কে চ্যায়ারম্যান হবে এটা নিয়েই কাহিনী।

একবার স্কিনে চোখ রাখলে না শেষ করে উঠতে পারবেন না তা বাজি রেখে বলতে পারি।। শুধু কাহীনিটা ধরার জন্য ১৫/২০ মিনিট খিচ মেরে বসে থাকবেন।কাহিনী অনেক সাজানো গোছানো।কাহিনী আপনাকে দুই তিনটা টুইষ্ট দিবে।এতেই মাশাল্লাহ বলে কতক্ষন চিন্তা করবেন আর এমন ধাচের আরো মুভি খুজতে থাকবেন(আমার দিকটা বললাম আরকি|

Tags