আসসালামুয়ালাইকুম বন্ধুরা,
আজ আপনাদের জন্য নিয়ে আসলাম সেরা ৫টি কোরিয়ান ভৌতিক সিনেমা। সিনেমা লাভাররা অব্যশই দেখবেন। আর যে সিনেমা গুলু দেখে ফেলেছেন কমেন্ট করে জানাবেন। কেন সিনেমা বাদ পড়লে লিখতে ভুলবেন না। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
1. Train To Busan (2016)
Genre : Horror | Thriller
Director : Yeon Sang-ho
IMDb : 7.5/10
Budget : 8.5 million USD
Collection : 98.5 million USD
Spoiler free
সত্যি কথা বলতে এ মুভি নিয়ে আলোচনা করার মত কিছু নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের চোখে মুভিটা না দেখছেন বুঝতে পারবেন না আসলে মুভিটা কেমন?
এটি ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া একটি কোরিয়ান মুভি।। জোম্বি এবং হরর রিলেটেড এই মুভিটি আর ৮-১০ হলিউড সিনেমার চেয়েও অনেক বড় কিছু। সিনেমার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনি পর্দা থেকে চোখ উঠাতেই পারবেন না।। ভাইরাস ছড়িয়ে গিয়ে পুরো শহরের মানুষ জোম্বিতে পরিণত হয়ে গিয়েছে। বাবাকে সাথে নিয়ে ছোট্ট মেয়েটার মায়ের কাছে ফেরার ট্রেন জার্নি।।দুর্দান্ত গল্প, অভিনয়, প্লট সবকিছুই অসাধারণ। থ্রিলার সিনেমা কাকে বলে, কতো প্রকার, কি কি তার জ্বলন্ত উদাহরণ হলো train to busan মুভিটি ।
মুভিটি অনেক ইমোশনাল।। শেষের দৃশ্য আপনাকে ইমোশনাল করতে বাধ্য করবে।। একজন বাবা তার মেয়ের জন্য কত কি করতে পারেন তার দৃষ্টান্ত হলো এই মুভি। তাছাড়া Don lee এর অভিনয় এবং তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর জন্যে জোম্বির সাথে লড়াই আপনাকে মুগ্ধ করবে।।
তাছাড়া আরো গা শিহরে উঠার মত অনেক মূহুর্ত আছে যা না দেখলে বুঝতে পারবেন না । আর শহর থেকে ট্রেন বুসানে যায় কি না কে মরলো কে বাঁচলো এসব জানতে হলে অবশ্যই মুভিতি দেখতে হবে।
হরর মুভি দেখার অভ্যাস অথব হার্ট দুর্বল করা সিনেমা যদি আগে দেখে থাকেন তাহলে এ মুভিটি দেখতে পারেন তাছাড়া না দেখাই ব্যাটার, কারণ মুভির শুরু হতে শেষ পর্যন্ত টান টান উত্তেজনা যা দুর্বলদের জন্য নয়!!
2. Train To Busan 2: Peninsula(2020)
Genre: Horror, Action, Thriller
Release Date: 15-07-2020
Runtime: 110 minutes
- ট্রেইন টু বুসান মাস্টারপিস মুভির সিকুয়েল হচ্ছে এইটা, প্রথম মুভিতে আমরা যেমন দেখেছি মানুষের বাঁচার লড়াই মেয়ের প্রতি বাবার ভালোবাসা স্ত্রীর প্রতি স্বামীর ভালোবাসা আর সেই মানুষ গুলোর জন্য নিজের আত্মত্যাগ। এর জন্য প্রথম পার্টে অনেক ইমোশন ছিলো মানুষের মনে দাগ কেটে ফেলছিলো এই জম্বি জনরার মুভিটা। মুভিটাতে সব ছিলো ইমোশন বলি যেটাই বলি নাহ কেন সব ছিলো।
~ আর এই কারনেই বেশির ভাগ মানুষ ট্রেইন টু বুসানের মত এই মুভিটাও দেখার সময় আশা করেছিলো ইমোশনাল কিছু আর তারা সেখানে ব্যর্থ হয়েছে। কারন মুভিটার জনরা সেই আগের মত এত গভির ভাবে সব ছিলো নাহ , এই দ্বিতীয় পার্টের গল্পই শুরু হয়েছে বুসানের ভাইরাস ছড়ানোর চার বছর পরে থেকে। যার কারনে এটা ফুল দমে জম্বি অ্যাকশন মুভি কারন চার বছর পর কোরিয়ার সব কিছুই ধংস হয়ে গেছে তখন জম্বিদের বাস ওখানে। এর জন্যই পরিচালক এবার জম্বি অ্যাকশন মুভি তৈরি করেছেন। মুভিটার অ্যাকশন দেখলে অনেক ভাল লাগবে সবারই, অ্যাকশনে কোন কমতি ছিলো নাহ। ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস এর মত গাড়ি নিয়ে যা ছিলো দেখার মত আর অ্যাকশন ম্যাড ম্যাক্স ফিউরি রোডের মত ছিলো কিছুটা। অ্যাকশন গুলো অনেক ভাল ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারছে পরিচালক, আর বিশেষ করে মেয়েটার গাড়ি চালানোটা ছিলে অস্থির।
- ট্রেইন টু বুসানের সাথে তুলনা নাহ করে, অ্যাকশন মুভি হিসেবে যদি কেউ দেখে অনেক ভাল্লাগবে।
3. The Wailing (2016)
Genre: Thriller, Horror
IMDb Rating: 7.5/10
Duration: 156 Minutes
- কালো যাদু, ম্যাজিক কিংবা মন্ত্রতন্ত্র নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। যদিও আধুনিক বিশ্বে এর কোনো ভিত্তি নেই। তবুও এই ব্যাপারে মানুষের মাঝে একটা রেশ রয়েই যায়। কারন', ইতিহাস ঘেটে দেখলে প্রত্যেক জাতিই একসময় কমবেশি তন্ত্রমন্ত্রে নিমজ্জিত ছিলো। সেটা হোক না কুসংস্কারের জেরেই।
তো এই কালো যাদু, তন্ত্রমন্ত্রের উপর ভিত্তি করে ২০১৬ সালে মুক্তি পায় "দ্য ওয়েলিং"।
প্লট : দক্ষিণ কোরিয়ার পাহাড়ি এক গ্রাম।
যেখানে বৃষ্টি ও বজ্রপাত লেগেই থাকে। হটাৎ গ্রামে এক জাপানি লোকের আগমন ঘটলো। তারপর থেকেই গ্রামে একের পর এক মানুষ নির্মম ভাবে খুন হতে লাগলো। কিন্তু কেউ কিছু বুঝতে পারছে নাহ। কারও কারও ধারনা প্রেতাত্মা ভর করেছে। কিন্তু মুভির মুল কাহিনী শুরু এরপরই।
কি হয়েছিলো ওই গ্রাম ও গ্রামের মানুষের?
কোরিয়ান থ্রিলার মুভির যেমন এক আলাদা মজা', তেমনি এদের হররও অসাধারণ। দ্য ওয়েলিং মুভিটির টোটাল সিনেমাটোগ্রাফি ছিলো অসাধারণ। পাশাপাশি দুর্দান্ত লোকেশন, স্ক্রিনপ্লের সাথে চমৎকার ব্যাকগ্রাউন্ড। মুভিটি দেখার উপযুক্ত টাইম সুনশান রাতে কম্বল মুড়ি দিয়ে।
হরর লাভাররা অনায়াসে একবার দেখে ফেলতে পারেন।
4. The Host (2006)
Genre ‧ Horror/Drama
Duration ‧ 2h 1m
IMDb - 7.1/10 ·
85% · Metacritic
93% · Rotten Tomatoes
প্লটঃ প্রথম দৃশ্যপটেই দেখা যায় এক আমেরিকান প্যাথোলজিষ্ট তার অ্যাসিস্টেণ্ট কে অর্ডার করে,২০০ বোতল ফর্মাএ্যালডিহাইড যেন ফেলে দেয় নদীতে।অ্যাসিস্টেণ্ট প্রথমে রাজি হয়না বাট পরে করতে বাধ্য হয়। তার কিছু দিন পর নদীর সমস্ত মাছ মরতে শুরু করে এবং একদিন অ্যাসিস্টেণ্ট সুইসাইড করে মারা যায়।
তার কিছু দিন পর এই নদীতে জন্ম হয় এক মনস্টার এর। যে কিনা গাং ডু এর মেয়ে কে নিয়ে যায় তুলে এবং তার সাথে মেরে যায় অনেক মানুষ কে।
প্রতিশোধ এর নেশায় পাগল বাবা গাং ডুর ছোট ভাই এবং বোন সাথে বাবা ও নেমে পড়ে মনস্টার এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে...!তারপর এগিয়ে যায় গল্প।
আমার কথাঃ
মুভিটায় একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে, সেটা হল পরিবারের সম্পর্ক।খুব সিরিয়াস তবুও হাসির একটা মুড থাকে।তারপর হঠাৎ করেই আপনাকে ভয় পাইয়ে দিবে।
5. #Alive(2020)
Genre: Thriller/Drama
RunTime: 1h 39m
IMDb:- 6.3/10
Director: Il Cho
একেতো কোরিয়ান তারওপর আবার জম্বি মুভি , এযেনো সোনায় সোহাগা! কারণ কোরিয়ান মুভির প্রেমে পড়েছিলাম ট্রেইন টু বুসান দেখেই। এই মুভিতেও কিছুটা ট্রেইন টু বুসান এর ফিল আসে কিন্তু বলতে গেলে একদমই ভিন্ন! পুরো শহর যখন জম্বিদের দ্বারা আক্রান্ত তখনও কোনোরকমে নিজের রুমে লুকিয়ে বেঁচে আছেন Joon-woo ।নেটওয়ার্ক নাই ,ইন্টারনেট নাই,রেডিও নাই ,খাবার শেষ হওয়ার পর পানিও শেষ! জানালা দিয়ে নিচে তাকাতেই দেখা যাচ্ছে ভয়ংকর জম্বি গুলা ঘুরাফেরা করছে এবং একটি জিবন্ত প্রাণ খুজতেছে। এখানে বাঁচার আশা Joon-woo যখন প্রায় ছেরেই দিছিলেন তখনই দেখতে পান তার মতোই কোনোরকমে বেঁচে আছেন আরেকজন মেয়ে! তারপর একত্রে তাদের দুইজনের শুরু হয় সেই ভয়ংকর জম্বিদের কাছ থেকে বেঁচে থাকার লড়াই। মুভিতে যথেষ্ট ভালো জম্বিদের স্ক্রিনটাইম ছিলো।থ্রিল সাসপেন্সের সাথে অস্থির BGM এবং Yoo Ah-In , Park Shin-Hye এর দারুন অভিনয় আর একশন সিনগুলা ছিলো বেশ উপভোগ্য।এই জম্বি পরিপূর্ণ শহর থেকে তারা বেঁচে ফিরে আসতে পেরেছিলো কিনা জানতে অবশ্যই দেখবেন এই চমৎকার মুভিটা।