আসসালামুওলাইকুম বন্ধুরা,
কেমন আছেন আপনারা? ভালো না থাকলে ভালোলাগার কিছু মুভি নিয়ে হাজির হলাম যেগুলো দেখলে আপনার মন ভালো না হয়ে থাকবে না। এই মুভিগুলো আমার খুবই প্রিয়। যারা যারা টাইম ট্রাভেল সম্পর্কে জানেন তাদের কাছে খুব ভালো লাগবে। কারণ এই মুভিগুলোতে আছে টাইম ট্রাভেল+রোমান্টিক। তো দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
1. Groundhog Day (1993)
IMDb: 8 (IMDb সেরা মুভির তালিকায় ২৩০নাম্বারে অবস্থিত)
Rotten tomatoes critics : 96%
Rotten tomatoes audience : 87%
কেমন হবে যদি আপনি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন। একই দিন বারবার আপনার সাথে রিপিট হচ্ছে।আপনি যাই করছেন তার মেয়াদ হল ২৪ঘন্টা। ২৪ঘন্টা পরে আবার সবকিছু নতুন করে শুরু হবে। তাহলে আপনি কি করতেন।
আর ঠিক এই ব্যাপারটি হয়েছে Phil এর সাথে। গল্পে দেখা যায় Pittsburgh এর এক টিভির আবহাওয়াবিদ হচ্ছে Phil। তাকে Pennsylvania'র বিখ্যাত Groundhog event কভার করতে পাঠানো হয়। কভার করে ফেরার সময় তারা তুষার ঝড়ের কারনে আটক পরে Pennsylvania তেই রাত কাটায়। এর পরদিন সকাল থেকেই Phil এর সাথে সময় রিপিটের ব্যাপারটি শুরু হয়। আর এইসময়গুলোতে Phil কি করে তাই এই ছবিতে দেখানো হয়েছে।
যারা যারা একটু ভিন্ন ধরণের মুভি খুজছেন এবং অনেকটা ভাল সময় কাটাতে চান তাদেরকে দেখার জন্য রিকমেন্ড করছি।
2. 13 Going on 30 (2004)
Genera : Romance/Fantasy
Cast: Mark Ruffalo & Jennifer Garner
Rotten Tomatoes : 65%
IMDb: 6.2/10 (রেটিং কম থাকলেও খুবই ভালো সিনেমা)
এটা একটি মেয়ে হটাৎ করে ১৩ বছর থেকে ৩০ বছরে পারি দেয়ার গল্প। এর বেশি কিছু বললাম না।
Mark Ruffalo আমার খুবই পছন্দের এক্টর। তার সকল সিনেমার মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় আমার এই সিনেমাটি।
এই সিনেমা আমার খুবই পছন্দের সিনেমা। এই সিনেমা সম্পর্কে বেশি কিছু বলবো না। সিনেমাটি যারা দেখেন নাই তাদের বলবো এখনই দেখতে বসে যান।
3. About Time (2013)
Genre : Romantic, Comedy-Drama, Fantasy
Director : Richard Curtis
Cast : Domhnall Gleeson, Rachel McAdams, Bill Nighy..
IMDB : 7.8
Rotten Tomatoes : 69%
স্টোরি: গল্পের নায়ক টিম, সে খুব ই বাজে সময় কাটাচ্ছে। কোন ফ্রেন্ড বা গফ নেই।সব কিছুই বোরিং।ঠিক তখন ই ২১ বছর বয়সে সে জানতে পারে তাদের বংশের ছেলেরা টাইম ট্রাভেল করতে পারে।
শুধুমাত্র যেসব প্লেস বা সময়ে সে ছিল সেখানে ট্রাভেল করতে পারবে, অতীতে ট্রাভেল করে, ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা পরিবর্তন করতে পারবে এটাকে সে গফ পাওয়ারর জন্য কাজে লাগালেও বেচারা ব্যর্থ হয়।
পরবর্তীতে লন্ডনে 'ল' নিয়ে পড়তে এলে একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয়,বাট টাইম ট্রাভেলিং এর সমস্যার জন্য মেয়ে তাকে ভুলে যায় তখন মেয়েকে আবার পটানো,বিয়ে করা,বিয়ের পর কিছু ফ্যামিলি প্রোবলেম র তার সলুউশন।এসব নিয়েই মুভিটা।দেখতে দেখতে আপনি একসময় গল্পের মাঝে হারিয়ে যাবেন।
মুভিটাতে লাইফের ছোট ছোট বিষয়গুলো,বাবা-ছেলের সম্পর্ক,হাজবেন্ড-ওয়াইফ,ভাই-বোনের সম্পর্কগুলো এতো সুন্দভাবে তুলে ধরেছে যে আমি বলে দিয়ে দেখার আনন্দ/তৃপ্তিটা স্পয়ল করে দিতে চাচ্ছি না।র টু বি অনেস্ট লিখার মাধ্যমে সেই অনুভূতি ব্যাখা করাও যাবে না।
আমরা অনেকেই আমাদের জীবন নিয়ে হ্যাপি না,নানান অভিযোগ আমাদের এসব বিষয়গুলো সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে র কি করে এতো কিছুর পরেও লাইফকে ইঞ্জয় করা যায় তা দেখায়।যেই বিষয়টা আমার সব থেকে ভালো লাগে।
সব কিছু মিলিয়ে এটা খুব ই ডিফরেন্ট একটা লাভ স্টোরি মুভি।যা আপনাকে হাসাবে র কিছু কিছু জায়গায় কাদাবেও।তাই দেখে না থাকলে মাস্ট ওয়াচ মুভি।আশা করি ভালো লাগবে।
4. The Time Traveler's Wife (2009)
Genres: Drama/Fantasy/Romance/Sci-Fi
IMDB Rating : 7.1
ভাবুন তো একজন মানুষ অস্বাভাবিক জেনেটিক্স ডিসঅর্ডার এ আক্রান্ত হওয়ায় যদি এলোমেলো ভাবে সময় পরিভ্রমণ করতে পারে, তাহলে তার সাথে ঠিক কি কি ঘটতে পারে...! কি ইচ্ছে হচ্ছে তাই না..! তাহলে ঝটপট দেখতে বসে পড়ুন এরিখ বান আর রাচেল ম্যাকএডাম্স অভিনীত দ্যা টাইম ট্রাভেলার্স ওয়াইফ।
স্পয়লার এলার্ট:
এরিখ জেনেটিক্স ডিসঅর্ডার এ আক্রান্ত হওয়ায় এলোমেলো ভাবে সময় পরিভ্রমণ করতে পারে। কখনও ভবিষ্যতে গিয়ে নিজের বউয়ের সাথে সংসার করে আবার কখনও ছোটবেলায় তার মা যে ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলো সেই ট্রেনে গিয়ে মায়ের সাথে গল্প করে আসে।মজার ব্যাপার হলো এরিখ সময় পরিভ্রমণ করে অতীত ভবিষ্যতে গেলেও তার বয়সের খুব একটা তারতম্য হতো না।আর সময় পরিভ্রমণ করার পর অতীতে বা ভবিষ্যতে পৌছালে সে সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে যেত কারন সে পোশাক নিয়ে সময় পরিভ্রমণ করতে পারতো না। যখন তার স্ত্রীর সাথে প্রথম দেখা হয় তখন তার স্ত্রী ছিলো ৮/১০ বছরের বাচ্চা একটা মেয়ে।প্রথম দেখা হওয়ার দৃশ্যটা একবার দেখে আপনার মন ভরবে না,বার বার টেনে দেখতে ইচ্ছে করবে।তো তাদের মধ্যে যখন সম্পর্ক তৈরী হয় তখন রাচেল বিয়ে করার জন্য এরিখ কে বলে। পরিবারের অমতে আর এরিখের আমতা আমতিতে বিয়ে করে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় রাচেল কে।সবথেকে হৃদয়বিদারক দৃশ্য আপনার জন্য শেষে ওয়েট করছে। ছবিটা না টেনে পুরোটা দেখে ফেলুন, আপনার প্রিয় মুভির তালিকায় আরেকটি মুভি যোগ হতে চলেছে...!
হ্যাপি ওয়াচিং!
5. Midnight in Paris (2011)
Director & Writer: Woody Allen
Genre : Romance/Fantasy
IMDb: 7.7/10
Rotten Tomatoes : 93%
(নো স্পয়লার)
আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, ফিটজেরাল্ড, দালি, পাবলো পিকাসো, হেনরি ম্যাটিসিসহ অনেক বড় বড় লেখক-শিল্পীকে একই মুভিতে দেখতে পারলে বিস্মিত না হওয়ার কোনো কারণ থাকে না। এই মুভিতে এমন বিখ্যাত সব ব্যক্তিরা একফ্রেমে থাকায় এটা ছিল উপভোগ করার মতো দারুণ মুভি।
রোমান্স জনরার মুভিগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই প্রেম-ভালোবাসার প্রাধান্য থাকে বেশি। কিন্তু Midnight in Paris মুভিটা রোমান্স জনরার হলেও এখানে প্রেম-ভালোবাসার চেয়ে প্যারিসের বিভিন্ন সময়কালের শিল্প-সাহিত্যকে তুলে ধরা হয়ে বেশি গুরুত্বের সাথে। সাধারণত ন্যারেটিভ বা ডকুমেন্টারি টাইপের মুভিগুলোতে কোনো স্থানের সৌন্দর্য, শিল্প-সাহিত্য সহজে উপস্থাপন করা যায়। কিন্তু এই মুভিতে একাধিক টাইমলাইনে প্যারিস শহরের সৌন্দর্য, নস্টালজিয়া ও আধুনিকতা, তাদের শিল্প-সাহিত্যের অগ্রগতি এসব খুবই সুক্ষ্মভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব বিষয় উপস্থাপন করতে গিয়ে বিখ্যাত লেখক-চিত্রশিল্পী সবাইকেই মুভিতে এনেছেন পরিচালক।
মুভির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, সবার অভিনয় আর পরিচালনা সবই ভালো ছিল। সবচেয়ে বেশি ভালো বিষয় ছিল এর প্লট বা স্টোরি। এরজন্যে অবশ্য মুভিটির পরিচালক ও রাইটার উডি এলেন Best writing ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতেছিলেন।